বিগত কয়েক বছর ধরে আইপিএলে ধারাবাহিকভাবে খেলে আসছেন বাংলাদেশের তারকা বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ২৯ বছর বয়সী এই পেসার সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও চেন্নাই সুপার কিংসসহ বিভিন্ন দলের হয়ে খেলেছেন। তাঁর অফ কাটার ও স্লগ ওভারে বোলিং দক্ষতা আইপিএলে বরাবরই প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু চলতি মৌসুমে নিলামে অবিক্রিত থাকলেন মুস্তাফিজ।
গত বছর মুস্তাফিজ দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ৯ ম্যাচে ১৪টি উইকেট তুলে নিয়ে দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। বিশেষত, মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে তাঁর বোলিংয়ে উন্নতি চোখে পড়ার মতো ছিল। তবে, মাঝপথে আইপিএল ছেড়ে দেশে ফেরার পর থেকেই যেন তাঁর প্রতি দলগুলোর আস্থা কমে গেছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এর নীতির কারণে আইপিএলের মাঝপথে খেলোয়াড়দের দেশে ফিরতে হয়। গত মৌসুমে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেললেও, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের জন্য মুস্তাফিজকে দেশে ফিরতে বাধ্য করা হয়। তবে সেই সিরিজে তিনি মাত্র দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান।
মুস্তাফিজের হঠাৎ দেশে ফেরার কারণে চেন্নাই সুপার কিংস দলটি বড় ধাক্কা খেয়েছিল। বিশেষ করে প্লে-অফে পৌঁছানোর লড়াইয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ পেসারের অনুপস্থিতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বোর্ডের এই নীতি আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি অন্যান্য ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইকে তিন বছরের জন্য ক্রিকেটারদের আইপিএলে অংশগ্রহণের ব্যাপারে নিরঙ্কুশ ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এখনও এই বিষয়ে মন্থর গতিতে এগোচ্ছে। খেলোয়াড়দের আইপিএলে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও পুরো টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করছে এবং এতে করে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের প্রতি তাদের আগ্রহ কমতে পারে।
মুস্তাফিজের আইপিএলে অবিক্রিত থাকা তাঁর জন্য হতাশাজনক। তবে তাঁর মতো মানসম্পন্ন বোলারের চাহিদা বিশ্বজুড়েই রয়েছে। তিনি বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার সুযোগ পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিসিবি যদি তাঁদের খেলোয়াড়দের আইপিএলে পুরো মৌসুম খেলার সুযোগ দেয়, তবে ভবিষ্যতে মুস্তাফিজের মতো তারকাদের আইপিএলে ফেরার সম্ভাবনা আবার জাগতে পারে।
মুস্তাফিজুর রহমানের আইপিএলে দল না পাওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নীতির প্রতি নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। দেশের ক্রিকেটারদের সঠিকভাবে ব্যবহার না করার কারণে বিসিবির এই মনোভাব তাদের ক্যারিয়ার এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এখন দেখার বিষয়, ভবিষ্যতে বিসিবি তাদের নীতি পরিবর্তন করে খেলোয়াড়দের জন্য আরও উদার মানসিকতা দেখায় কিনা।