ঢাবির তোফাজ্জল হত্যা কান্ডে চুপ কেন সমন্বয়ক’রা- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনায়, যেখানে চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, তা নিয়ে প্রশাসনের সমন্বয়করা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নীরবতা পালন করছেন। এই নীরবতার পেছনে একটি বড় কারণ হতে পারে ছাত্র রাজনীতি এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মন্ত্রীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
ছাত্র আন্দোলনের শক্তি এবং এর প্রভাব
বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র আন্দোলন সবসময়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তনে ছাত্রদের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। বহু মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক নেতার উত্থান এই ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই হয়েছে। তারা ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসে দেশের উচ্চপদে আসীন হয়েছেন। এর ফলে, অনেক রাজনৈতিক নেতা এবং মন্ত্রীদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের প্রতি একটি বিশেষ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের সমর্থন করেছে এবং সেই সমর্থন তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সমন্বয়ক ও প্রশাসনের নীরবতা
- সমন্বয়ক ও প্রশাসনের নীরবতা তাদের মধ্যে জটিল দ্বিধার ফলাফল হতে পারে।
- ক্ষমতাসীন অনেকেই ছাত্রদের সমর্থনে অবস্থান ধরে রেখেছেন।
- ছাত্র রাজনীতির নেতাদের প্রভাবশালী অবস্থান শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কথা বলা বা পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন করে তুলছে।
- শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া রাজনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
- এই ধরনের পদক্ষেপ তাদের সমর্থন ও জনপ্রিয়তায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া, বিশেষ করে যখন তারা প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের সদস্য, তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজনৈতিক নেতারা জানেন যে, তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং জনপ্রিয়তা অনেকাংশেই নির্ভর করে এই শিক্ষার্থীদের সমর্থনের ওপর।
যদি তারা এই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন বা তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, তাহলে তাদের পক্ষে দাঁড়ানো ছাত্র সংগঠন বা রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতার শিকার হতে পারেন। এর ফলে তাদের ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে বিপর্যয় আসতে পারে।
শক্তিশালী ছাত্র সংগঠন এবং মন্ত্রীদের ভূমিকা
শিক্ষার্থীরা যে রাজনৈতিক নেতাদের জন্য আন্দোলন করেছে, সেই নেতারা এখন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিলে, তা তাদের জনপ্রিয়তায় সরাসরি আঘাত করতে পারে। ফলে, এই নীরবতা তাদের নিজের অবস্থানকে রক্ষা করার একটি কৌশলও হতে পারে।
সমাধানের পথ
- সমন্বয়ক ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
- ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের ক্ষমতা বা রাজনৈতিক সম্পর্ক উপেক্ষা করতে হবে।
- মানবিকতা ও নৈতিকতার ওপর ভিত্তি করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া অপরিহার্য।
- সঠিক পদক্ষেপ না নিলে এর নেতিবাচক প্রভাব সমাজে পড়তে বাধ্য।