বাংলাদেশে গাড়ি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র

গাড়ি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র- বাইক, কার বা গাড়ি মটর চালিত কোন যানবাহন চালানোর ক্ষেত্রে আপনার রোড ট্রানসপোর্ট আইন মেনে কিছু কাগজ প্রয়োজন পরবে। নিচে কোন যানের জন্য কি কি কাগজ লাগে তার বিস্তারিত দেওয়া হলো:

বাইক চালাতে কি কি কাগজ লাগে

বর্তমানে বাইক চালাতে বাইকের সাথে ৩টি কাগজ রাখলেই চলবে:

  • ১। বাইক রেজিষ্ট্রেশন সাটিফিকেট, বাইকের নাম্বার প্লেট,
  • ২। আপডেট টেক্স টোকেন
  • ৩। ড্রাইভিং লাইসেন্স

বর্তমান আইন অনুযায়ী আপনি বাইক চালানোর সময় এই কাগজ রাখলে ট্রাফিক সার্জন আপনাকে কাগজের মামলা দিকে পারবে না।

প্রাইভেট কার বা অন্যান্য গাড়ি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র

  • ১। গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন সাটিফিকেট
  • ২। আপডেট টেক্স টোকেন
  • ৩। ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • ৪। ফিটনেস সাটিফিকেট
  • ৫। গাড়ির বিমার কাগজ

গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন সার্টিফিকেট কি

BRTA হতে অনুমোদন পত্র এবং নিবন্ধন কারির তথ্য যাচাইয়ের ডকুমেন্ট। বাইক বা গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন সাটিফিকেট মূলত বাইকের বা গাড়ির নাম্বার প্লেট এর তথ্য সহ মালিকানা তথ্য বহন করে। সহজ ভাবে এটা দ্বারা জানা যাবে যে গাড়িটি টি বিআরটিএতে আপনার নামে আছে। নিচের ছবি দেখলে আপনি এটার বিস্তারিত বুঝতে পারবেন।

এখানে নতুন গাড়ি ক্রয়ের পর এই কার্ড পেতে ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগতে পারে। (BRTA অফিস ভেদে এটা আরো বেশি সময় নিতে পারে) সেময় আপনাকে একটা রেজিষ্ট্রেশন একনলেজমেন্ট স্লিপ দিবে, আপনি সেটা দিয়ে কাজ চালাতে পারবেন। (ট্রাফিক কাগজ চাইলে কার্ডের পরিবর্তে এটা দেখালে হবে)

গাড়ি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র

একনলেজমেন্ট স্লিপ এর নমুনা

  • রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার
  • চেসিস নাম্বার
  • ইঞ্জিন নাম্বার
  • উৎপাদনের বছর

মালিকানা পরিবর্তন এর সময় আপনাকে এই কার্ড/স্লিপ জমা করতে হবে, সেক্ষেত্রে মালিকানা পরিবর্তন এর পর আপনাকে একটা Ownership Transfer Acknowledgement Sleep দিবে আপনি সেটা দিয়ে আপনি গাড়ি চালাতে পারবেন।

  • নতুন বাইক গাড়ি রেজিষ্ট্রেশন করার নিয়ম:

বাইকের বা গাড়ির মালিকানা পরিবর্তনের নিয়ম জানতে ভিজিট করুন

টেক্সট টোকেন কি

আপনার গাড়ির অনুকুলে আপনি সরকারকে টেক্স প্রদান করেছেন তার প্রমান পত্র। আপনি গাড়ি রেজিষ্ট্রেশন করার সময এক সাথে ১০বছরের টাকা জমা করতে পারবে, অথবা দুই বছরের করে টাকা জমা করতে পারবেন।

টেক্স টোকেন চেনার উপায়

উপরের ছবিতে টেক্স টোকেন এর নমুনা দেওয়া হলো। আপনার গাড়ির উৎপাদন বছর থেকে পরবর্তী ১০বছর আপনাকে টেক্স পরিশোধ করতে হবে। ১০ বছর পর বাইকের টেক্স/কর দিতে হয় না। দশবছর পর আপডেট করতে শুধু কাগজ প্রিন্টের ২৩টাকা ব্যাংকে জমা করতে হবে।

** পুরাতন গাড়ি কেনার সময় গাড়ির কাগজ চেক করার নিয়ম

গাড়ির ক্ষমতা, বয়স, ইঞ্জিনের (সিসির) উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের ফি প্রদান করতে হয়।
সাধারণত ১০০ সিসির উপরের বাইকের ক্ষেত্রে ২বছরের টেক্সট টোকেনের জন্য ভ্যাট সহ ২৩০০ টাকা প্রদান করতে হয়। (বর্তমানে ট্রাস্টি বোর্ড সার্টিফিকেট এর জন্য ১১৫০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়। এটার মেয়াদ ১০ বছর, ১বার দিলে পরবর্তী ১০বছর এই ১১৫০ টাকা আর দিতে হবে না)

ড্রাইভিংলাইসেন্স

গাড়ি চালানোর জন্য জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জিনিস লাইসেন্স। আপনি গাড়ি চালাতে পারেন কিনা এটা নিশ্চিত করে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স। যা বিআরটিএ কর্তৃক আপনাকে অনুমোদন দিয়ে থাকে। ড্রাইভিং লাইসেন্স সাধারণভাবে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটা পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।

অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স

এটা দিয়ে আপনি আপনার নিজের নামে রেজিস্ট্রার কৃত বাইক, প্রাইভেট কার বা সিএনজি ইত্যাদি চালাতে পারবেন। আপনি অন্য কারো নামের, বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চাকরির জন্য গাড়ি চালাতে পারবেন না। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ সাধারণভাবে ১০ বছর হয়ে থাকে।

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স

আপনি সকল ধরনের মোটরযানের জন্য পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারবেন। এই লাইসেন্স দিয়ে আপনি অন্যের গাড়ি চালাতে পারবেন। নিজের গাড়ি চালাতে পারবেন। ভাড়ার গাড়ি চালানো অথবা ড্রাইভিং চাকরি করতে পারবেন। এ লাইসেন্সের মেয়াদ সাধারণভাবে 5 বছর হয়ে থাকে।

ফিটনেস সাটিফিকেট

আপনার গাড়ি সড়কে চলাচল করার জন্য উপযুক্ত কিনা, এটাতে কোন বিষাক্ত ধোয়া বের হচ্ছে কিনা হেডলাইট ঠিক আছে কিনা, এ সকল বিষয় পর্যবেক্ষণ করার পর BRTA কর্তৃক আপনাকে একটি সার্টিফিকেট প্রদান করবে। যেটাকে ফিটনেস সার্টিফিকেট বল হয়। (বাইকের ক্ষেত্রে প্রযোজন ফিটনেস সাটিফিকেট হয় না) তবে প্রাইভেটকার এবং অন্যান্য অন্যান্য গাড়ির ক্ষেত্রে এক বছর পর পর ফিটনেস সার্টিফিকেট নবায়ন করতে হয়।

ফিটনেস নবায়নের পদ্ধতি

ফিটনেস নবায়ন করার জন্য প্রথমে বিআরটিএতে একটি গাড়ি পর্যবেক্ষণের ডেট নিতে হয়। এবং নির্ধারিত ফি জমা করতে হয়। ফি জমা করার পর নির্ধারিত দিনে বিআরটিএতে গিয়ে বিআরটিএ অফিসার কে গাড়ি পর্যবেক্ষণ করাতে হবে। তিনি উপরোক্ত বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে আপনাকে আপনার গাড়ি রোডে চলার উপযুক্ত কিনা এটার অনুমোদন দিবেন। অথবা কোন কিছু ঠিক করতে হলে সেটা আপনাকে জানিয়ে দিবে।

ট্রাফিক সার্জেন্ট উপরোক্ত কাগজপত্র ছাড়াও বিভিন্ন কারণে মামলা দিতে পারে।

  1. হেলমেট বা সিটবেল্ট না পরা: মোটরসাইকেলে হেলমেট এবং গাড়িতে সিটবেল্ট না পরলে।
  2. ট্রাফিক সিগনাল না মানলে।
  3. নির্ধারিত গতির চেয়ে বেশি গতিতে গাড়ি চালানো।
  4. ভুল পদ্ধতিতে বা ঝুঁকিপূর্ণভাবে ওভারটেকিং করা।
  5. গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে।
  6. ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ থাকলে।
  7. গাড়ির শব্দ বা বায়ু দূষণ: অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে বেশি শব্দ বা দূষণ সৃষ্টি করা। (অনেকে বাইকের শব্দ বৃদ্ধির জন্য মডিফাইড সাইলেন্সার লাগায় সে ক্ষেত্রে)
  8. অবৈধ পার্কিং: নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে গাড়ি পার্ক করলে।
  9. বিপদজনক ড্রাইভিং: বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালিয়ে অন্যের জীবন বা সম্পদের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে।

এছাড়াও, সড়ক পরিবহন আইনের যেকোনো নিয়ম অমান্য করলে ট্রাফিক সার্জন আপনাকে মামলা দিতে পারে।

Share it to You and your Friends

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Scroll to Top